ইবিতে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে হল না থাকায় আক্ষেপ শায়খ আহমাদুল্লাহর

Sep 11, 2025 - 22:07
 0  3
ইবিতে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে হল না থাকায় আক্ষেপ শায়খ আহমাদুল্লাহর
ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রয়াত অধ্যাপক ও বরেণ্য আলেম ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে কোনো আবাসিক হল বা একাডেমিক ভবন না থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি 'শূন্যতা অনুভব' করছেন বলে জানান। এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একটি হলের নামকরণের আহ্বান জানান।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সিরাত সম্মেলনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করলেও একটি শূন্যতা হৃদয় থেকে অনুভব করেছি। সেটা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়টির বরেণ্য প্রফেসর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহর নামে একটি অ্যাকাডেমিক কিংবা আবাসিক হল না থাকার শূন্যতা।

আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার ছিলেন দেশের সম্পদ এবং জাতির জন্য আল্লাহর এক নেয়ামত। তিনি শুধু প্রাজ্ঞ আলেমই ছিলেন না, তিনি ছিলেন দরদী সমাজ সংস্কারক। বক্তৃতা ও রচনার মাধ্যমে জীবনভর তিনি শিরক, বিদআত, খ্রিষ্টান মিশনারী অপতৎপরতা সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করেছেন। তার এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অসংখ্য মানুষ সঠিক পথের দীশা পেয়েছে। আবার শতধা বিভক্ত জাতিকে তিনি যেভাবে ঐক্যের পথ দেখিয়েছেন, সেটাও এই দেশের প্রেক্ষিতে বিরল। তিনি আমাদেরকে প্রান্তিকতা ছেড়ে মধ্যমপন্থা শিখিয়েছেন। চিন্তার ভিন্নতা সত্ত্বেও ঈমানের অভিন্নতায় সকল মানুষকে কীভাবে কাছে টানতে হয়, শিখিয়েছেন।

তিনি আরও লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মতো আরো অনেক গবেষক নিশ্চয় আছেন, কিন্তু তার মতো এতটা জনবান্ধব, গণমুখী এবং সর্বশ্রেণির কাছে সমাদৃত লেখক-গবেষক খুব কমই আছেন। আবার কর্মের গুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন, তিনি তাদের শীর্ষে। শুধু তাই নয়, ইসলামিক সাবজেক্টের শিক্ষক হিসেবে ইসলামকে তিনি শুধু ক্লাসরুমেই সীমাবদ্ধ রাখেননি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয়ে ইসলামের বার্তা নিয়ে তিনি সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন, ইসলামকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। অন্য কোনো শিক্ষকের ক্ষেত্রে এমন নজির বিরল। এর মাধ্যমে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কেও দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত করেছেন। ফলে সর্বজনশ্রদ্ধেয় বরেণ্য এই আলেমের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল থাকা যুক্তি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দাবি।

তিনি জানান, মৌলিক গবেষণা কর্মের মাধ্যমে স্যার যে হীরকতুল্য রচনাভাণ্ডার রেখে গেছেন, বিশ্বাস করি, সেগুলোই তাকে অমর করে রাখবে। তারপরও স্যারের নামে যদি কোনো একটি হলের নামকরণ করা হয়, তবে এর মাধ্যমে তার অবদানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হবে। পাশপাশি নবীন শিক্ষার্থীরাও স্যারের কল্যাণমূলক চিন্তার সাথে পরিচিত হতে উদ্বুদ্ধ হবে।

শায়খ আহমাদুল্লাহর এই পোস্টে শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করে বরেণ্য এই আলেমের নামে আবাসিক হল বা অ্যাকাডেমিক ভবনের নামকরণের দাবি তুলেছেন৷

এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর সিরাতুন নবি (সা.) উদযাপন উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে “বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুন্নাতে রাসুল (সা.)” শীর্ষক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। এসময় তিনি ক্যাস্পাস পরিদর্শন করেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow