ঘুরে আসুন যাদুকাটা নদী
‘‘জাদুকাটা নদী’’ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি নদী যা সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভপুরে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত। মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় হতে বয়ে চলে যাদুকাটা নদীটি প্রায় বিশ মাইল পর্যন্ত গিয়ে ‘রক্তি’ নামে সুরমা নদীতে এসে বাংলাদেশে মিলিত হয়েছে। নদীর এক পাড়ে দেখা যায় সবুজ বৃক্ষরাজিময় বারেক টিলা ও অন্য দিকে খাসিয়া পাহাড়। রেণুকা হচ্ছে যাদুকাটা নদীর আদি নাম। নদীর নামকরণ নিয়ে প্রচুর গল্প রয়েছে। কথিত আছে যে, নদী তীরবর্তী কোন এক গাঁয়ের বধু তার শিশুপুত্র যাদুকে কোলে নিয়ে এই নদীর মাছ কাটছিলেন এক পর্যায়ে অন্যমনষ্ক হয়ে মাছের জায়গায় তার কোলের শিশুকে কেটে ফেলেন। বাচ্চাটির নাম ছিলো যাদু। পরবর্তীতে সেই প্রচলিত কাহিনী থেকেই নদীটির নাম হয় যাদুকাটা নদী।
যাদুকাটার প্রথম দৃষ্টিনন্দন আকর্ষণ হলো নদীর পরিষ্কার জল, নীল আকাশ এবং সবুজ পাহাড় যা তাৎক্ষণিকভাবে পর্যটককে আকর্ষণ করার জন্য যথেষ্ট। কিছু জায়গায় নদীর জল এতটাই পরিষ্কার যে পাথর এবং বালি খালি চোখে দেখা যায়। শুকনো মৌসুমে, পর্যটকরা নদীর তীর ধরে হাঁটতে বা জলে হাঁটতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ডিঙ্গি রাইডগুলিও বিভিন্ন ধরণের রোমাঞ্চকর পরিবেশ তৈরি করে। বর্ষাকালে নদীর পানি পূর্ণ হলে নদীর সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। তবে শরত্কালে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটি মরুভূমিতে পরিণত হয়।
কিভাবে যাবেন?
সুনামগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি কিংবা মোটরসাইকেল ভাড়া করে চলে যান লাউড়ের গড় হয়ে যাদুকাটা নদী দেখতে। মোটরসাইকেল ভাড়া নিবে ২০০-২৫০ টাকার মত। এক মোটরসাইকেলে দুইজন উঠা যাবে। যাদুকাটা নদীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখতে বারিক্কা টিলায় উঠে পড়ুন। যা দেখবেন আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে।
কোথায় খাবেন?
জাদুকাটা নদীর একপাশে লাউড়ের গড় অন্যপাশে বারিক টিলা পাহাড়। লাউড়ের গড় বাজারে মোটামুটি মানের দেশীয় খাবার পাবেন। বারিক টিলার নিচে নাস্তা ও দেশীয় খাবারের হোটেল আছে, চাইলে খেয়ে নিতে পারবেন যাদুকাটা নদীর রূপ দেখতে দেখতে। এছাড়া প্রয়োজন হলে সাথে কিছু শুকনো খাবার রাখতে পারেন। ভালো খাবার খেতে চাইলে আপনাকে সুনামগঞ্জ শহরে ফিরে এসেই খেতে হবে।
What's Your Reaction?