গাইবান্ধায় মহিলা লীগ নেত্রী মহিলা দলের সভাপতি, কমিটি স্থগিত
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা মহিলা দলের নবগঠিত কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে আওয়ামী মহিলা লীগের এক নেত্রীকে। শুধু তাই নয়, মহিলা দলের একাধিক পদে পদায়ন করা হয়েছে মহিলা লীগের নারীদের। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এই পদ দেওয়া হয়েছে তাদেরকে। তবে তুমুল সমালোচনার মুখে কমিটি স্থগিতও করা হয়েছে।
উপজেলা কমিটির সভাপতির পদ পাওয়া ওই মহিলা লীগ নেত্রীর নাম আরজিনা পারভীন চাঁদনী। তিনি আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি এক সময় সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন বলেও জানা গেছে। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপির বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলেও বিএনপির সংযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে চাঁদনীর বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে পদ কেনার অভিযোগ তুলে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ ডিসেম্বর গাইবান্ধা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন শোভা ও কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৌসুমী বেগম তমা স্বাক্ষরিত একটি তালিকা ফেসবুকে প্রকাশিত হলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। তালিকায় মহিলা লীগের নেত্রীদের সভাপতি ও সাংগঠনিক পদে নাম থাকায় বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
শুধু সভাপতি পদে নয় ওই তালিকায় আরও দেখা যায়, কমিটির সাংগঠনিক পদে রয়েছে নাসিমা আকতারেরর নাম। যিনি আগে আওয়ামী লীগের তাঁতী লীগের সভানেত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, মাঠে লড়াই সংগ্রাম করি আমরা। হঠাৎ কেউ এসে সভাপতির পদ পেলে তা মেনে নেওয়া যায় না। ৫ আগস্টের পরে জন্ম নেওয়া কোনো নেতা পলাশবাড়ীতে রাজনীতি করতে পারবে না। এ সময় নেতাকর্মীরা প্রশ্ন রাখেন, যিনি আওয়ামী লীগে সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন কিনতে পারেন তিনি কীভাবে বিএনপির মহিলা দলের সভাপতি হন? কীভাবে এমন পদ পান?
তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে ঘটনার দুই দিন পর গতকাল ২২ তারিখ সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই কমিটি স্থগিত করা হয়। জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন শোভা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে নানারকম প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ায় উক্ত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।
এদিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরজিনা পারভীন চাঁদনী। তিনি দাবি করেছেন, তার বাবা ও পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আর বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে ছবি থাকতেই পারে, এর মানে এই নয় যে আমি আওয়ামী লীগ করি।
অন্যদিকে জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন শোভা বলেন, আমার দলের কমিটি আমি দিয়েছিলাম। অন্যদের মাথা ঘামানোর তো প্রয়োজন নেই। এ সময় টাকা নিয়ে মহিলা লীগের নেত্রীদের মহিলা দলে পদায়নের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
What's Your Reaction?