জাকসু নির্বাচন: ছাত্রদলের বর্জনের পর শিবিরের ঐক্যের ডাক

Sep 11, 2025 - 22:03
Sep 11, 2025 - 22:04
 0  4
জাকসু নির্বাচন: ছাত্রদলের বর্জনের পর শিবিরের ঐক্যের ডাক
ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর শিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের’ সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী মাজহারুল ইসলাম সহাবস্থানের রাজনীতির আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাওলানা ভাসানী হল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা সহাবস্থানের রাজনীতি চাই, সহমর্মিতার রাজনীতি চাই। ছাত্রদল ভোটে বর্জন করলেও আমরা তাদের সঙ্গে আছি, আবার যদি তারা ফিরে আসে তাতেও আমরা তাদের পাশে থাকব। আমাদের লক্ষ্য দূরত্ব কমিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়া।”

তিনি আরও দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেই ভোট চলছে। যতক্ষণ লাইনে শিক্ষার্থীরা থাকবে ততক্ষণ ভোটগ্রহণ চলবে বলে উপাচার্য ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা ষড়যন্ত্রে পা দেয়নি, তাই প্রশাসনের টেকনিক্যাল ভুলগুলো বড় আকার ধারণ করতে পারেনি।

এদিকে ভোটের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে। শহীদ তাজউদ্দিন হল, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম হল ও ফজিলাতুন্নেছা হলে ভোটগ্রহণ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের প্রতিবাদের মুখে।

সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব প্রশাসনের প্রস্তুতিহীনতাকে দায়ী করে বলেন, “নির্বাচনের আগে কোনো সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সকালে পোলিং এজেন্ট পাঠালে দায়িত্বশীলরা জানিয়েছে তারা কিছু জানেন না। এগুলো আগেই সমাধান করা উচিত ছিল।”

ছাত্রদলের প্রভাব নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলে বলেন, “সকাল থেকে ক্যাম্পাসে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের ঘোরাফেরা দেখা গেছে। বিভিন্ন হলে তারা ভোটারদের প্রভাবিত করেছে। এমনকি কেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশের নিয়ম থাকলেও নারীদের হলে তা মানা হয়নি।”

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে মাওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী বৈশাখী আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাজউদ্দিন হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ভোটার তালিকায় ছবি ছিল না। ২১নং হলে মব তৈরি করা হয়েছে। জাহানারা ইমাম হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে।

তার দাবি, “এটি কারচুপি ও প্রহসনের নির্বাচন। মেয়েদের হলে একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিয়েছেন। শিবিরপন্থী সাংবাদিকরা আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছে। নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের রায়ের প্রতিফলন ঘটছে না, তাই আমরা নির্বাচন বর্জনে বাধ্য হচ্ছি।”

এদিকে ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী স্মরণ এহসান লিখিত বক্তব্যে বলেন, “এই নির্বাচন যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে হচ্ছে না। কমিশন শুরু থেকেই আমাদের আস্থা ও প্রত্যাশা নষ্ট করেছে। অমর্ত রায়ের প্রার্থিতা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাতিল করাই ছিল অনিয়মের সূচনা। আজকের ভোট গ্রহণে সেই অনিয়মের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow