দুর্গাপূজায় অনুদান দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা

Sep 20, 2025 - 22:13
 0  7
দুর্গাপূজায় অনুদান দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা
ছবি : সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজায় হতদরিদ্রদের সরকারি অনুদান দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। গত ১০ সেপ্টেম্বর উপজেলার বাঘইল দাশপাড়া গ্রামে অনুদানের প্রলোভনে প্রায় অর্ধশত মানুষের কাছে থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিকার না পেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, ঈশ্বরদী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সূনীল চক্রবর্তী বাঘইল দাশপাড়া গ্রামের শ্রী শ্রী বারোয়ারী মাতৃ মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী পলাশ চন্দ্রকে মোবাইল ফোনে জানান উপজেলা পরিষদ থেকে দূর্গাপূজা উপলক্ষে নগদ ৪২০০ টাকা ও চাল-ডাল-তেলসহ বেশ কিছু সরকারি অনুদান দেওয়া হবে। পলাশ চন্দ্রকে তার নিজ এলাকার ৫ জন বাসিন্দার জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান গ্রহণ করতে উপজেলা পরিষদের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে সেই নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন সুনীল চক্রবর্তী।            

পরে পলাশ চন্দ্র ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে তাকে আরেকটি নম্বর দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে আরেকজনের যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই প্রতারক চক্রের কথানুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করা হলে তিনি অনুদান ফরম বাবদ ৬০০ টাকা করে দিতে হবে বলে জানান।

শ্রী শ্রী বারোয়ারী মাতৃ মন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ চন্দ্র নিজ এলাকার অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে অনুদানের ব্যাপারে কথা বলে ৩৬টি পরিবারের নিকট থেকে মোট ২১ হাজার ৬ শত টাকা উত্তোলন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির বিকাশ নম্বরে (০১৮৮০-৩৪৬৬৬৫) সেই টাকা প্রেরণ করেন। কিন্তু টাকা পাঠানোর পরেই নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক সুনীল চক্রবর্তীকেও বিষয়টি অবগত করলে তিনি নম্বরটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেন।

এদিকে ধর্মীয় উৎসবের ঠিক আগ মুহূর্তে এমন প্রতারনার শিকার ভুক্তভোগীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, চক্রটির সাথে পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী জড়িত।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী শ্রী জয় চন্দ্র দাশ, ভারতী রাণী ও পারুল নামে কয়েকজন বলেন, ‘সুনীল চক্রবর্তী যে নম্বর দিয়েছে সেই নম্বরে টাকা পাঠানোর পর থেকে নম্বরটি বন্ধ হয়ে গেছে। অনুদান তো দুরের কথা, আমাদের থেকে নেওয়া টাকায় এখন ফেরত পাওয়া দায়। আমরা এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চাই এবং আমাদের টাকা ফেরত চাই।’

এ বিষয়ে বাঘইল দাশপাড়া শ্রী শ্রী বারোয়ারী মাতৃ মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী পলাশ চন্দ্র বলেন, ‘উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সূনীল চক্রবর্তীর পরামর্শে অনুদানের আশায় একটি নম্বরে ৩৬ জনের থেকে ২১ হাজার ৬ শত টাকা প্রেরণ করেছি। আমরা চাই সুনীল চক্রবর্তী যদি চক্রটির সাথে জড়িত না থাকে তবে তিনি দ্রুত এ বিষয়ের সমাধান করবেন। তা না হলে আমরা দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।’ 

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সূনীল কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচয় দিয়ে অনুদানের কথা জানালে আমি দরিদ্রদের কথা ভেবে তাদের নম্বরটি দিয়েছিলাম, কিন্তু বুঝতে পারিনি এটা প্রতারক চক্র। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি চলছে। দেখা যাক কি হয়।’

আর এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, ‘আসন্ন দূর্গাপূজা উপলক্ষে সমাজসেবা অফিসে এমন কোন অনুদান আসেনি, আর আমাদের অফিস থেকে কাউকে ফোন করাও হয়নি।’

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow