‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনার বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন হলে আয়োজন করে পাবিপ্রবি প্রেসক্লাব। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি বের করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল। প্রধান আলোচক ছিলেন যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান।
বিশেষ আলোচক ছিলেন যুগান্তরের সহসম্পাদক এমদাদুল হক এবং ইত্তেফাকের রাজনীতি ও নির্বাচন-বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার। সভাপতিত্ব করেন পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রেসক্লাবের সদস্যসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, গণমাধ্যম হলো জনগণের স্কুল। ‘সংবাদপত্র মানুষের চিন্তাকে সংযোগ (কানেক্ট) ঘটায়। পত্রিকা সমাজের দর্পণ। আমাদের শাসকরা আয়না দেখে ভয় পায়। একটি রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ-আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভটি হলো সংবাদপত্র। একজন সাংবাদিককে সব বিষয়ে জানতে হবে; তা ছাড়া ভালো সাংবাদিক হওয়া সম্ভব না। কারণ তাঁকে সব বিটে কাজ করতে হয়। গণমাধ্যম হলো জনগণের স্কুল। সাংবাদিককে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলতে জানতে হবে। গত ১৭ বছরে মিডিয়াতে একটি তোষামোদকারী শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার কারণে অনেক সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মিডিয়া ছিল সেলফ সেন্সরড। গণঅভ্যুত্থানের পরে গণমাধ্যম আবার মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা তৈরি করে নিচ্ছে। অনেক বেশি স্বাধীনভাবে সাংবাদিকরা কাজ করতে পারছেন। ১৭ বছরে মিডিয়া ছিল ব্রিটিশ আমলের মতো স্তাবকতাপূর্ণ। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে কাজে লাগিয়ে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা দেশকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারব।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল-আওয়াল বলেন, ‘নলেজ ইজ পাওয়ার’। যার যত বেশি নলেজ (জ্ঞান) থাকবে, সে তত বেশি আলোকিত হবে। আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদার ক্ষেত্রে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা এখানে যোগদানের পর বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য কাজ করছি। সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। আমাদের মধ্যে জটিলতা বেশি, নিজের স্বার্থকে সবসময বড় করে দেখি; সে জন্য আমরা জাতিগতভাবে পিছিয়ে আছি। একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য মোক্ষম মাধ্যম হলো শিক্ষা। গত ১৭ বছরে শিক্ষাকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভালো চিন্তা থাকতে হবে এবং দায়িত্ব নিতে হবে; তাহলে দেশ ভালোভাবে পরিচালিত হবে। পূর্বের বাংলাদেশ দেখতে চাইনা; একটি সুন্দর আগামীর বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে পাবনার ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, সৎ মানুষ আয়না দেখতে ভয় পায়না। সবার সহযোগিতায় সহনশীল ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের শক্ত ভ‚মিকা না হলে, অর্জন আরও কঠিন হতে পারত। ইতিহাসের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। আমাদেরকে রোল মডেল হতে হবে।
প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রকাশিত ‘বিপ্লবের দিনলিপি’ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা শিথিল।
What's Your Reaction?

