পর্যটনের অপার সম্ভাবনা দুর্গাপুরের সাদা মাটির পাহাড়
বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা। দুই সীমানায় পাহাড় মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে সোমেশ্বরী নদী। সাদামাটির নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে ঘিরে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। ভৌগোলিক নিদর্শন পণ্য হিসেবে স্থানটি স্বীকৃতি পাওয়ায় এর কদর বেড়েছে সর্বত্র। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে দিনদিন স্থানটির গুরুত্ব বাড়ছে। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবেও সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে এসেছে আমূল পরিবর্তন। ইন্টারনেট আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিতি ঘটছে সবার কাছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো পর্যটক ভিড় করেন আশপাশের বিভিন্ন স্পটে। অক্টোবর থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনা থেকে সবচেয়ে বেশি। শীতের আগমনে এবারও বাড়ছে পর্যটক। সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ বিজয়পুর ও বিপিনগঞ্জের সাদা মাটির পাহাড় ও সোমেশ্বরী নদীর সচ্ছ পানি।
স্থানীয়দের মতে, আগের চেয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় সহজেই মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে যেতে পারছেন সীমান্তের কাছে। এখানে আসতে প্রায় প্রতিটি সড়ক এখন পাকা। তবে টয়লেট ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়াসহ নানা দূর্ভোগে পর্যটকরা। সম্ভাবনাময় এই পর্যটনকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের জন্য অবকাঠামোসহ পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা করলে এ অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। এছাড়া এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটন খাত থেকে বছরে অন্তত শত কোটি টাকার রাজস্ব আয়ও।
এদিকে পর্যটকদের ঘিরেই স্থানীয় অনেকের রোজগার। সারাদিনের আয়ে চলে সংসার। স্থানীয় ইজিবাইক চালক শান্ত মিয়া। পর্যটক ঘিরেই তার রোজগার। তবে শীত মৌসুম এলেই বাড়ে রোজগার। সাদা মাটির পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ছবি তুলে দেয় ফটোগ্রাফার দিদারুল ইসলাম। গত দুই বছর ধরে এইখানে রয়েছেন।
সম্ভাবনাময় এই উপজেলা ঘিরে স্থানীয় অর্থনীতির খাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। শুধু প্রয়োজন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন।
২০২১ সালের ১৭ জুন জিআই পণ্য সনদ পায় এ দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুরের পর্যটন স্পষ্ট সাদা মাটি। সাদামাটির পাহাড় ছাড়াও পাহাড়ি কন্যা নামে খ্যাত সোমেশ্বরী নদী, বিজয়পুর জিরো পয়েন্ট, কমলা বাগান, রানীখং মিশন, রাশি মনি স্মৃতিসৌধ, পাহাড়ি নৃ-গোষ্ঠির পাহাড়, ফান্দা ভ্যালিসহ রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য পর্যটন স্পট।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাভিদ রেজওয়ান কবীর বলেন, পর্যটন খাতের বিভিন্ন কষ্ট লাঘবে কাজ করা হচ্ছে। আগের তুলনায় এলাকার রাস্তাঘাট উন্নত হওয়ায় পর্যটকদের কাছে দুর্গাপুরের কদর বেড়েছে। পাশাপাশি সাদামাটির নিরাপত্তায় বিজিবি ও পুলিশকে বিশেষ নজরদারির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
What's Your Reaction?