চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুর মৃত্যু, ঢামেকে হাতাহাতি ও ভাঙচুর

চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সাফওয়ান (৪) নামে এক শিশুর মৃত্যুর পর স্বজনরা চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালের ট্রলি বহনকারীদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জেরে বেশ কিছু লোক এসে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালায়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে জুয়েল নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
হাসপাতালের ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত আনসার সদস্য মো. আব্দুল্লাহ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক শিশুকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। চিকিৎসকরা দেখে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন স্বজনরা চিকিৎসকদের ওপর ক্ষেপে যান এবং মারধর করতে উদ্যত হন। পরে সেখান থেকে জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তারা অভিযোগ করেন, ভুল চিকিৎসায় শিশুটি মারা গেছে।
জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সাকিব বলেন, জরুরি বিভাগ থেকে মরদেহ নিয়ে বের হওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র চাওয়া হয়। তখন রোগীর স্বজনরা আমাকে মারতে আসেন। ওই সময় ট্রলিম্যান জুয়েল এগিয়ে এলে ১৫–২০ জন মিলে তাকে মারধর করেন। মারতে–মারতে তাকে জরুরি বিভাগ থেকে নতুন ভবনের সামনে নিয়ে যায়। হাসপাতালের অন্য স্টাফরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
মৃত শিশুটির ফুফু মোছা. সীমরান জানান, বংশালের সাত রওজার বাংলাদেশ মাঠ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত সাফওয়ান। সে কিডনির সমস্যায় ভুগছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সে হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এখানে কোনো চিকিৎসাই দেওয়া হয়নি। এজন্য আমাদের বাচ্চা মারা গেছে। উল্টো শিশুটির বাবা সামির ও তার বন্ধু সোয়েব হোসেনকে মারধর করেছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
এ বিষয়ে জানতে ঢামেক হাসপাতালের ২১০ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
ঢামেক হাসপাতালে আনসারের প্লাটুন কমান্ডার সেলিম মিয়া জানান, শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে ২১০ নম্বর ওয়ার্ডের দরজা ভাঙচুর করেন স্বজনরা। দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকদের মারতে যান। পরে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্যকেও মারতে যান তারা। তখন এক ট্রলিম্যান এগিয়ে গেলে তাকে বেধড়ক পেটানো হয়।
ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, এক ট্রলিম্যানকে মারধরের পর উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল কর্মীরা মৃতের দুই স্বজনকে মারধর করে আটকে রাখেন। পরে তাদের শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ এখন শান্ত।
What's Your Reaction?






