৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের কারাগারে আটক ৭ বাংলাদেশি, মুক্তির ব্যবস্থা নিতে নোটিশ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের কারাগারে আটক ৭ বাংলাদেশি জেলের মুক্তির ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টে রিট করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার সংশ্লিষ্টদের এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বিজিবি প্রধান, ডিসি কুড়িগ্রাম ও চিলমারীর ইউএনওকে লিগ্যাল নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল গণমাধ্যমে ‘মানচিত্রের সীমারেখার ফাঁদে পড়ে ৬ মাস ধরে ভারতের কারাগারে বন্দি বাংলাদেশি ৭ জেলের’ বিষয়ে খবর প্রচারিত হয়। গত বছরের ৪ নভেম্বর পথ ভুলে তারা কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার জিঞ্জিরাম নদী হয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে। এরপর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফের হাতে আটক হন। তারপর থেকে শুরু হয় তাদের জেল জীবন। বর্তমানে তারা মেঘালয়ের কালাইর চর পেট্রোল থানা আমপাতিতে আটক রয়েছেন।
আটক জেলেরা হলেন- কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার হরিনের বন্দ এলাকার রাসেল মিয়া (৩৫), একই উপজেলার ব্যাপারীপাড়ার বিপ্লব মিয়া (৪৫), চিলমারীর মীর জাহান আলী (৪৫), বকুল মিয়া (৩২) ও আমির আলী (৩৫), উপজেলার রাজিবপুরের বালিয়ামারী এলাকার আঙ্গুর হোসেন (২০) ও রৌমারী উপজেলার যাদুর চর বকবান্ধা এলাকার চাঁন মিয়া (৬০)।
তবে বিএসএফের হাতে আটকের বিষয়টি ওই জেলেদের পরিবারগুলো জানতে পারে ভারতীয় মিডিয়ার সংবাদ প্রকাশের পর। তবে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে হাজতে আটক থাকলেও কীভাবে তাদের ফেরানো যায়, তা নিয়ে বর্তমানে চিন্তায় পড়েছেন ভুক্তভোগী জেলে পরিবারের সদস্যরা।
মাঝখানে ভারতীয় এক আইনজীবী দিয়ে জামিনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় এই অসহায় পরিবারগুলো। সবশেষ গত ২১ এপ্রিল তাদের জামিন শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও অর্থাভাবে আর হয়নি। জামিনের জন্য এগিয়ে আসেনি কেউই। এমন বাস্তবতায় ৭ জেলের পরিবারে এখন শুধুই কান্নার রোল।
তাদের ভাষ্য, ভারতীয় উকিলের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করেছি। ২ লাখ টাকা চায়, আমারা গরিব মানুষ। টাকা দিতে পারি না। এদিকে আমাদের সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বাচ্চাদের পড়াশোনাতেও ক্ষতি হচ্ছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাহায্য চাই।
এ বিষয়ে মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, রাষ্ট্র এগিয়ে না আসলে জেলেদের ফেরানো কঠিন হবে। জেলেরা আন্তর্জাতিক সীমা বুঝে নদীতে মাছ ধরতে যাবে এটা তাদের কাছে আশা করা বোকামি। এইসব ভুল-ভ্রান্তির জন্য তো তারা পার্শ্ববর্তী দেশে সারাজীবন আটকে থাকবে না। এজন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
What's Your Reaction?






